রায় নিয়ে যা বললেন ওসি মোয়াজ্জেমের আইনজীবী

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের আপত্তিকর ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার মামলায় ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এই রায় দেন।

রায় ঘোষণার সময় ওসি মোয়াজ্জেমকে ঢাকার আদালতের হাজতখানায় উপস্থিত ছিলেন।

রায়ে আদালত বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। যে কারণে তাকে এই মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হয়েছে। সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমকে এই টাকা ভুক্তভোগী নুসরাত জাহানের পরিবারকে দিতে হবে।

ওসি মোয়াজ্জেমের আইনজীবী ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন, আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, সজল নামে একজন সাংবাদিকের কাছেই এই ভিডিওটি গিয়েছিল। আমরা আদালতকে বলেছি, আমাদের ভিডিওটি মিসিং হয়েছে। এটি সজল ছাড়া অন্য কোনো ডিভাইসে যায়নি এটি এক্সপার্ট রিপোর্ট।

তিনি বলেন, ওই ভিডিওটি আসামির মোবাইল থেকে ফেসবুক কিংবা ইউটিউবে পাবলিকলি শেয়ার হয়নি। সুতরাং আসামির কোনো দোষ নেই।

মোয়াজ্জেমের আইনজীবী আরও বলেন, মামলার তিনটি ধারার মধ্যে একটি ধারায় আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এক্ষেত্রে আমরা আংশিক সফল। আমরা অবশ্যই উচ্চ আদালতে যাব। আদালত আবেগের বশে আজকের এই রায় দিয়েছেন। তাঁর মক্কেল ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

তিনটি ধারায় তার ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। একটিতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি বলে জানান ব্যারিস্টার সুমন। তিনি বলেন, তবে রায় বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মামলার বাদী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সাইদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নুসরাত জাহানের ভিডিও ছেড়ে দিয়ে সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম যে অপরাধ করেছিলেন, সেটি আজ আদালতের রায়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

২০ নভেম্বর এই মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হলে আদালত রায়ের জন্য আজ তারিখ ধার্য করেন।

গত ১৭ জুলাই সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সেদিন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন আদালতের কাছে দাবি করেন, তিনি নির্দোষ।

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতের ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়। সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গত ২৭ মে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। আদালত তা আমলে নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন। এর ২০ দিনের মাথায় গত ১৬ জুন মোয়াজ্জেম হাইকোর্ট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।

 

 

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন